টাউনলভ্যভোজ্যঃ ডালের বড়া

 


ডালের বড়া

শ্রীমতি ইডলি রসরাজ

 

প্রিয় পাঠক এরপর যখন দিন ধীরে ধীরে বিকেলের গন্ডি পেরিয়ে রাতের দিকে এগোয় তখন তার রোশনাই-এর কথা কোনটা ছেড়ে কোনটা বলবো। জিভ তখন যেন স্বয়ংক্রিয় হতে চায়। আর তাকে সাহায্য করতে চায় হাত। এমন কিছু একটা তখন দরকার যে কাজ করতে করতে মুখ চলতে থাকবে। ঠিক তখনই পথ চলতে চলতে আমাদের আজকের বস্তুটির জন্য মানিব্যাগ হাতড়ে খুচরো বের করে আনি।

আজ ডালের বড়ার কথা খুব খুব মনে হওয়াতে শহরের রাস্তায় তন্ন তন্ন করে খুঁজে কোথাও একে পেলাম না। আর যখন যা পাওয়া যায় না তখন কেন জানি মন বারে বারে সে জিনিসই খুঁজে চলতে থাকে। । লোকজনকে জিজ্ঞেস করাতে তারাও খুব একটা ডালের বড়াওয়ালাদের হদিস দিতে পারলো না।

সেই কতদিন আগে সুমন লিখেছিলেন-‘ এ শহরে এসছো তুমি কবে কোন রাজ্য থেকে/ তোমাদের দেশে বুঝি সব মানুষই বাঁশি শেখে’। ডালের বড়া না পেয়ে শ্রান্ত, ক্লান্ত, ঘর্মাক্ত হয়ে এককাপ চা নিয়ে রাস্তার পাশের চায়ের দোকানে বসে বসে ভাবতে লাগলাম সত্যি তো তাই। যাদের কাছ থেকে শহরের রাস্তায় ছোট ছোট ডালের বড়া কিনে খেয়েছি তারা তো সবাই পাশের রাজ্যেরই লোক। 
ছোট্ট একটা চার চাকার ওপরটা সমতল এমন গাড়ি। সাথে গামলায় যে জিনিসটি দিয়ে বড়া হচ্ছে সেটি মেখে প্লাস্টিক দিয়ে ঢাকা। আরেকটি ছোট উনুনে বসানো ছোট কড়াই। উনুনটি বাইরে থেকে দেখা যায় না এমন। শুধু কাছে গিয়ে দাঁরালে তাপ লাগে। আরেকটি মাপক যন্ত্র। দশ টাকার কিনলে বেশ খানিকটা মেপে দেয়। কিছুক্ষণ মুখ চলতে থাকে। 
কবে তারা এই উপাদেয় জিনিসটি আমাদের শহরে পা রেখেছিলেন, উঁহু, ঠিক মনে করতে পারলাম না। ছোটবেলায় কি একে দেখেছি শহরের রাস্তায়? না দেখিনি তো। তাহলে কবে এলো? আর কোথায়ই বা আজ গেলো তারা? আর কি ফিরে আসবে না কোনদিন? বাড়ি গিয়েছে মেয়ের বা বোনের বিয়ে দিতে? আসবে না আর এখানে ? কবে আসবে? এসব ভাবতে ভাবতে বাড়ির পথ ধরি। আকশে মেঘ ডাকে। নাহ, আজ ডালের বড়ার খুব দরকার ছিল।      
 

বানাতে চাইলে দেখুন     

সূচিপত্রে যাওয়ার সূত্র

Comments

Popular posts from this blog

ছবিতে নারী এবং নারীর ছবিঃ শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়। অষ্টম পর্ব।

টৌন জলপাইগুড়িঃ সুয়ো স্টেশন দুয়ো স্টেশন

গোসানী মঙ্গল অবলম্বনে 'তথাস্তু': রঙ্গন রায়। তৃতীয় পর্ব।