টুক করে ঘুরে আসিঃ বেঙ্গল সাফারি
বেঙ্গল সাফারি
সত্যম ভট্টাচার্য
আগে এমন একটা ব্যাপার ছিল যে কোনভাবে
কয়েকদিনের ছুটি মানেই চল পাহাড়ে। এমনিতে গরমের বা পুজোর ছুটি তো আছেই তার সাথে এসব
ছিল বাড়তি পাওনা। শনি-রবিবারআর তার আগে পিছে একটা দুটো ছুটির দিন আর একটা দুটো সি এল
যোগাড় করতে পারলেই কেল্লাফতে। চালাও পানসি বেলঘড়িয়া। কিন্তু করোনা এসে আমাদের সে অভ্যেস
ভেঙে দিয়েছে। এখন পেছন ফিরে তাকালে ভাবি কত কত ছুটি গিয়েছে তখন। অথচ স্রেফ বাড়িতে বসা।
তা সে যাই হোক। তখন করোনা খবরে কাগজে
বা টিভি অনুযায়ী কিছুটা কমেছে। কিন্তু চারিদিকে প্রচুর বিধিনিষেধ। সরকারী অফিস চলছে
২৫ শতাংশ কর্মচারী নিয়ে। সিনেমা হল বা শপিং মলের অবস্থাও তথৈবচ। কিন্তু কাঁহাতক আর
বাড়িতে বসে থাকা যায় এতদিন। এক সকালে দুম করে ঠিক হল বেঙ্গল সাফারি যাওয়া হবে। ইন্টারনেট
খুঁজে খবর পাওয়া গেল যে খোলা আছে।
ছোটদের বাঘ দেখাতে এই সাফারির জুড়ি নেই
খানিক এগোনোর পর মনে হল ক দিন আগেও
তো রাস্তায় পুলিশ পাহারা ছিল। হাজারো জিজ্ঞাসাবাদ। কোথায় যাওয়া হচ্ছে? কি কাজ? রাজ্যের
প্রশ্ন। শিব ঠাকুরের আপন দেশে তখন পানীয়র দোকান খোলা রাখা যাবে অথচ চায়ের দোকান নৈব
নৈব চ। ঠিক হল আমাদের যদি পুলিশ কিছু জিজ্ঞেস করে বলা হবে নার্সিঙহোমে অসুস্থ আত্মীয়কে
দেখতে যাওয়া হচ্ছে। যাই হোক তারপর তো মানে মানে পোঁছোনো গেলো বেঙ্গল সাফারী।
বেঙ্গল সাফারীর সব থেকে বড় সুবিধা
হচ্ছে এখানে পৌঁছোনোর জন্য শিলিগুড়ি ঢুকলেও হয় না ঢুকলেও চলে। যদি ব্যক্তিগত গাড়িতে
কেউ যান তাহলে জলপাইগুড়ি থেকে ইস্টার্ন বাইপাস ধরে শিলিগুড়ি চেকপোস্টে উঠে সেখান থেকে
সেবকের দিকে গেলেই রাস্তার বাম হাতে বেঙ্গল সাফারী। আবার কেউ যদি বাসে যান তাহলে সেবক
মোড় থেকে শালুগাড়ার অটোতে চেপে বসে নেমে যান বেঙ্গল সাফারীতে।
তো আমরা পৌঁছলাম। কিন্তু খবর যা পাওয়া
গেল লোক না থাকার জন্য সকালের জঙ্গল সাফারী ক্যানসেল হয়েছে। যদি লোক হয় তাহলের পরের
শিফটের টিকিট দেওয়া হবে, নচেৎ নয়। আমাদের বলা হল অপেক্ষা করতে। এমনিতে চমৎকার জায়গা।
শাল সেগুনের ছায়া ভরা বনে সময় কাটানোর নিরালা অবসর। কেউ চাইলে সাফারী নাও করতে পারেন। বান্ধবীকে নিয়ে গেলে হারিয়ে যাবার
এসব আদর্শ জায়গা।
কিন্তু আমরা তো গিয়েছি সাফারী করবো
বলে। মেয়ের সেটাই মুখ্য আকর্ষন। আর অবশেষে আমরা ঢুকতে পারলাম টিকিট কেটে। বেশ সুন্দর
ছোট ছোট জংলা ছোপের এসি বাস। তাতে উঠে ঢুকে পড়া গেলো সাফারীর ভেতর। বাঘ, চিতা, ভাল্লুক,
হরিণ, ময়ূর,হাতি- মানে এদিককার জঙ্গলে যা যা দেখা যায় স্বাভাবিক ভাবে সবই আছে। তাই
নিরাশ হবেন না এটুকু বলাই যায়।
ফোটোঃ লেখক
Khub sundor likhechho
ReplyDelete